সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২১

পথ শিশু ।


কেউ দেখেনা খালি গায়ে 

শীতের রাতে কুকুরের পাশে শুয়ে থাকা শিশু । 

কেউ দেখে না  কিশোরী মেয়েকে ছিড়ে খায় শকুনেরা । 

কেউ দেখেনা শিশুর পাশে অযত্নে অবহেলায় 

মরেপড়ে থাকা তার অভাগিনী মা ।

শিশুটি অপেক্ষায় থাকে সারা দিন, সারা রাত  ।

কিন্তু ফুটপাতে পড়েথাকা মা আর কোন দিন যাগে না । 

অবুঝ শিশু বুঝেনা তার মা মারা গেছে  ।

তবুও শিশু তার মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলে 

ওঠো,জাগো মা আমার খুব খিদা লাগেছে খেতে দাও ।

অনিকের প্রান্তর ।

যখন এই দেহ থেকে চলে যাবে প্রাণ 

এই পৃথিবীর সকল যন্ত্রণার হবে অবসান 

পড়ে থাকবে প্রাণ অনিকের প্রান্তর 

একা একা ঘুরে বেড়াবো দূর-দূরান্তর  

গ্রহ থেকে  গ্রহে  

নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে 

আকাশ গঙ্গা ছায়াপথ দেখে 

অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথে  

ব্ল্যাক হোল থেকে ওয়ার্মহোল 

দেখবো কত শত উনিভার্স থেকে মাল্টিভার্স 

আমি হয়ে যাব এই বিশ্বজগতের এক বিশাল অংশ ।

আমাকে কেউ করতে পারবে না ধ্বংস ।

হয়ে যাব অবিনশ্বর ।

প্রতি সন্ধ্যায় বসাবো কবিতা পাঠের আসর 

গ্রহ থেকে গ্রহে ।

তারকা থেকে  তারকয় ।

কবিতার ছন্দে আনন্দে হারাবে মহাবিশ্ব সুরের মূর্ছনায়। 

বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১

চিঠি

প্রিয় প্রিয় তমা আমার । 

আমার প্রানের প্রিয়তমা  । 

সব পড়ে থাকবে । 

শুধু আমি থাকবো না । 

আমার প্রিয় বই, 

 প্রিয় কলম, প্রিয় লেখার খাতা ।

প্রিয় ফুলবাগান , প্রিয় জন্মভূমি। 

যেখানে জন্ম নিয়ে বেঁচে আছি জনম জনম ।

যেখানে শৈশব-কৈশোর-যৌবন পার করে এসেছি । 

ভালোবেসে ফুল, নদী,ঘাস ,লতাপাতা,

প্রিয় পেয়ারা গাছ ।

যার ফুলে ,ফলে ঘ্রাণে বেড়ে ওঠা আমার শৈশব ।

চললাম এক অজানার পথে । 

নতুন জগতে । 

যেখান থেকে হয়তো ফেরা হবেনা কোনদিন আর ।

শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২১

দুঃখটা আমার রয়েই গেল ।

 দুঃখটা আমার রয়েই গেল 

বুকের খুব গভীরে 

কৃষ্ণগহ্বরের মত গ্রাস করে নিচ্ছে ধীরে ধীরে 

তার অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি 

শেষ হয়ে যাচ্ছে জীবনের সব লেনদেন । 

এই ছোট্ট জীবনে সুখের ছোঁয়া কোনদিন পেলাম না । 

দুঃখের বোঝা মাথায় নিয়ে হাটতে হাটতে আমি ক্লান্ত ।

আর কোথায় যাবো ? 

কোথায় গেলে সুখ পাব ? 

হয়তো এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ আসে  

দুখের সাগরে বিলীন হয়ে যেতে । 

আমিও বিলীন হয়ে যাব চিরতরে 

আসবো না আর কোন দিন ফিরে এই ধরণীর তীরে । 

জানি তাতে কিছু যায় আসে না কারো 

তবুও লিখে যাব তাহাদের তরে । 

যারা আমার মত ঝরে পড়ে গেছে অঝোরে । 

যাদের থ্রি ডাইমেনশনের এই মহাবিশ্বে 

তিনকূলে কেউ নেই । 

যারা হয়নি কোনদিন কারো ভালোবাসার মানুষ । 

জুটেছে কেবল অবহেলা । 

যাদের মায়া-মমতা হীন কেটেছে ছেলেবেলা।

বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২১

প্রেমের ইতিহাস ।

 প্রথম দিনের সূর্য 

যখন নেমে আসে পশ্চিম আকাশে 

কপোত-কপোতীরে জড়িয়ে ধরে ভালোবেসে ।

হৃদয়ের এই মধুর খেলা 

থামে না কভু নেমে আসে সন্ধ্যা 

কেটে যায় বেলা । 

সন্ধ্যার আকাশে কালো মেঘ 

বৃষ্টির মত ঝরে পড়ে অঝোরে ভালবাসার মধুর আবেশ ।

সৃষ্টি করে এক গভীর প্রেমের ইতিহাস 

তার সাক্ষী তাকে চন্দ্র-সূর্য আকাশ,বাতাস । 

মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১

কাদম্বরীর সুইসাইড

 

রবীন্দ্রনাথের নতুন বৌঠান কাদম্বরী দেবীকে নিয়ে লেখা আমার একটি স্বরচিত কবিতা কাদম্বরীর সুইসাইড

——আলমগীর হুসাইন । 

একটিমাত্র হৃদয় তাতে বিদলো হাজার তীরের ফলা 

একে একে হয়ে গেল সব শেষ 

হলো না পথ চলা ।

তোমার পথ মিলিয়ে গেল দিক দিগন্তে 

আর আমি হারিয়ে গেলাম অনন্তে  ।

আর আসবো না তোমার দ্বারপ্রান্তে 

দেখা হবে না পথ প্রান্তে  । 

আশার আলো হয়ে গেল সব ফ্যাকাশে 

জানি তবুও উদিত হবে সূর্য , পূর্ব আকাশে  

অস্ত যাবে সন্ধ্যায় । 

ছেয়ে যাবে আকাশ তারায় তারায় 

আমি মিলিয়ে যাব সেথায় । 

যদি কোনদিন কেউ ভালোবাসো আমায় 

খুঁজে নিয় সেথায়  । 

তাই বুকভরা ব্যথায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে  

সূর্যের মতো এক জ্বলন্ত হৃদয় নিয়ে 

চলে গেলাম অনন্ত ধূসর জগতে । 

ফিরে আসবো না আর কারো পথের কাঁটা হতে ।

বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২১

রক্ত 

আজ রাতে লেখব জীবনের সবচেয়ে দুঃখের কবিতা । 

যে দুঃখের কোন রং নেই 

আছে কেবল হৃদয় ভেদ করা কৃষ্ণগহ্বরের মত ছোট-বড় হাজার কোটি গর্ত 

আজ এই নিশিতে মনে পড়ছে তাকে ,

যাকে চিরজীবন ভালোবেসেছি অথচ তার মুখ কোনদিন দেখা হলো না একটিবার । 

আজ এই নিশিতে মনে পড়ছে সেই বুকছেড়া বিরহের গভীর রাতের কথা 

যে রাতে কোন তারা ছিল না আকাশে 

কালো অন্ধকারে ছেয়ে গিয়েছিল বসন্তের আকাশ 

যে রাতে মরে গিয়েছিল সেই আহত যুবক 

যার প্রেমিকার ছুড়ে মারা তীরের আঘাতে ঝরছিল লাল রক্ত অনর্গল 

সে যুবক কোনদিন সেই ক্ষত সারিয়ে তুলতে চায় নি 

সে যুবক কোনদিন ঝরতে থাকা রক্ত মুছেনি 

এটা তার প্রেমিকার শেষ দেয়া উপহার ভেবে।